মুনিরীয়া-যুব-তবলীগ-কমিটি-বাংলাদেশ

 

মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ কি?

একবিংশ শতব্দীর দ্বার প্রান্তে এসে আজ বিশ্বে যে অস্থিরতা বিরাজমান তা আমাদের যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয়, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং পরকালিন স্থায়ী জীবনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসের অভাব। বাস্তবিক পক্ষে এ যেন নব্য জাহেলিয়াতের পদধ্বনী।

ছলনাময় পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে আমাদের জন্য একটি সঞ্চয়ক্ষেত্র। আল্লাহ পাক যুগে যুগে তার মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে- বিশ্বের সকল মানুষকে তাঁর নির্ধারিত দ্বীনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরল সত্য পথের অনুসারী হবার জন্য অনুপ্রানীত করেছেন। আল্লাহর সুমহান মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এসেছে পৃথিবীর অধিকাংশ লোক, তা বাস্তবক্ষেত্রে অতি অল্পই গ্রহণ করেছে। পরিনতিতে এ অশান্ত বিশ্বের মানুষ হাহাকার, হতাশাগ্রস্থ ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ যুগ এক ভয়ঙ্কর দুষিত পরিবেশের দিকে এগিযে যাচ্ছে। তা সকলেই জানার কথা। আমাদের মধ্যে নিত্য নতুন ফিতনার সৃষ্টি হচ্ছে। অতএব এ পরিস্থিতিতে সকল মুসলমানের কুরআনের শিক্ষার সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং প্রিয় নবী (দঃ) এর প্রতি শ্রদ্ধার সাথে তাঁর আদেশ নিষেধকে মেনে চলার জন্য দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা অবশ্যই কর্তব্য হয়ে পড়েছে।

বর্তমান সমাজে অলি আল্লাহ এবং হক্কানী আলেম গণ হযরত নবী করিম (দঃ) এর হেদায়তের আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন অর্থাৎ অলি আল্লাহগণ প্রিয় নবী (দঃ) এর ন্যায় তাঁদের বেলায়তের শক্তি দিয়ে মানুষকে ছেরাতুল মোস্তমি (সহজ ও সঠিক পথ) এর সন্ধান দিচ্ছেন।

জাতীর এ ক্রান্তিলগ্নে আমরা এমন এক হাদিয়ে জমান, মোর্শেদ গাউছুল আজম সাক্ষাত পেয়েছি যিনি এলমে শরীয়ত ও এলমে মারেফাত উভয় জ্ঞানের দিশারী। যিনি খাজায়ে বাঙ্গাল হযরত শাহ্ ছুফি সৈয়দ হাফেজ মুনির উদ্দীন নূরুল্লাহ (রহঃ) এর অন্যতম বিশিষ্ট খলিফা,জমানার গাউছুল আজম, যাঁর জীবনটা হচ্ছে হুজুর পাক (দঃ) এর জীবনারূপ। যিনি সহনশীলতা ও সত্যবাদিতার মাধ্যমে জীবনের মহান ভিত রচনা করেছেন।তাঁর জীবনের কঠোর রেয়াজত, ধৈর্য্য, সাধনা, মহত্ব, সততা ও একাগ্রতা তাঁকে মহান আল্লাহপাক অতি উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তিনি অতিব উচ্চ মার্গের কাঠোর সাধক এবং খুলসিয়াতের অনন্য ব্যক্তিত্ব। যিনি সামনের দিকে সামান্য ঝুকে বিনম্র নয়নে মাটির দিকে দৃষ্টিপাত করে চলতে থাকেন। তিনি এমন একজন মোকাম্মেল মোর্শেদ যাঁর নিকট নেই শরীয়তের বিন্দু মাত্র ত্র“টি, সুন্নতে নব্বীর কোন অবহেল, এমনকি মোস্তাহাবের কোন বিচ্যুতি। যার সীনা মোবারক থেকে সীনার রূহানী তাওয়াজ্জুহ্ (ছবক-ফয়েজ) নেয়ার জন্য কোন মহিলা তরিক্বতপন্থীকে তাঁর সামনে যেতে হয় না। বিশ্বের যে কোন প্রান্তে-মহিলা তরিক্বতপন্থী থাকুক না কেন, মহান মোর্শেদে গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী তাঁর আপন খানকা কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ থেকে ‘তাওয়াজ্জুহ বিল-গায়েব’ তথা আধ্যাত্মিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছবক-ফয়েজ প্রদান করেন। এভাবে মহিলা তরিক্বতপন্থীগণকে মোর্শেদ গাউছুল আজম বাতেনি নেয়ামত প্রদান করে থাকেন। তিনি এমন একজন মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম যিনি ‘রসুলনোমা’ মোর্শেদ গাউছুল আজম হিসাবে স্বীকৃত, কেননা যাঁরা তাওয়াজ্জুহর বিনিময়ে অনেক তরিক্বতপন্থী রসুলে পাক (দঃ) এর দর্শন লাভ করেছে। যিনি সারাটি জীবন রসুলে পাক (দঃ) এর ঘর মাদ্রাসার খেদমতে উৎসর্গ করেছেন। যাঁর জীবনের অধিকাংশ আয় মাদ্রাসা এবং তরিক্বতের খেদমতে ব্যয় করেছেন। এ মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম যে কোন মাহ্ফিলে ৮০০ বছর পূর্বের হযরত গাউছে পাক আবদুল কাদের জিলানী (রাঃ) এর মাহলি স্বরূপ “ওয়াজ্দ” এর জ্বলন্ত প্রমান পাওয়া যায়। হযরত খাজা মুঈন উদ্দীন চিশ্তি (রহঃ) যেভাবে বেলায়তের শক্তি দিয়ে মন্দির মূখী মানুষকে কাবামূখী করেছেন অনুরূপভাবে আমাদের মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী তাঁর রূহানী শক্তি দিয়ে সন্ত্রাসের আস্তানামূখী যুবকের করেছেন মসজিদমূখী। তার তাওয়াজ্জুহর মাধ্যমে তরিক্বতপন্থীদের ক্বলবে অঙ্কিত হয়ে যায় ‘আল্লাহ’ নকশা এবং গুনাহর পর্দা হয়ে যায় ছিন্ন বিছিন্ন। মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী মোরাকাবায় এমন ভাবে নিমগ্ন থাকেন যে, প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত মোরাকাবায় অতিবাহিত করেন। ইমামুত তরিকত হযরত শাহ্ সৈয়দ আবদুল বারী ওয়াইছি, আল হাছানী ওয়াল হোছইনী (রাঃ) এর উক্তি “হে আল্লাহ! আমার এ হক ছিলছিলাকে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে দিন। এ মহান বাণী আমাদের মোর্শেদ গাউছুল আজম সাংগঠনিক ভিত্ত্বিতে এশায়ত কর্মসূচীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতেছেন। সে মহান মোর্শেদ বরহক হচ্ছেন হযরত বখতেয়ার মাহি ছাওয়ারের অন্যতম বংশধর কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ হযরতুলহাজ্ব শায়খ ছৈয়্যদ গাউছূল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব, তাঁর নির্দেশিত তরিক্বত টি সম্পূর্ণরূপে শরীয়ত ভিত্ত্বিতক তথা কোরান-হাদীস এজমা ও কিয়াসের দৃষ্টিতে ত্র“টিমুক্ত। জাতীর শ্রেষ্ট সম্পদ যুব সমাজকে এ ভিভিষীকাময় দুষ্টচক্রের হাত থেকে পরিত্রান দেয়ার জন্য সাংগঠনিক ভাবে রূহানী বিপ্লবের প্রয়োজন। সে মহান উদ্দেশ্য আমাদের মাননীয় মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ১৪০০ বছর পূর্বের “হিলফুল ফজুলের” ন্যায় গঠন করেছেন “মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ”। ইহা একটি সর্ম্পূন অরাজনৈতিক তরিক্বত ভিত্ত্বিক আধ্যাত্মিক সংগঠন । চট্টগ্রাম মধ্যম হালিশহরের সুলতান আউলিয়া, খাজায়ে বাঙ্গাল, হযরতুলহাজ্ব শাহ্ সেয়দ হাফেজ মুনির উদ্দীন নূরল্লাহ (রহ্ঃ) এর নামানুসারে এ সংগঠনের নাম “মুনিরীয়া” রাখা হয়েছে।

“যুব নামে দেশের তথা মুসলিম বিশ্বের যুব সমাজকে উক্ত সংগঠনের অন্তর্ভূক্ত করার জন্য উক্ত শব্দটি সংযোগ করা হয়েছে।

“তবলীগ” অর্থ- এশায়াত বা প্রচার। ধর্মীয় বাণী অপরের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য “তবলীগ” শব্দ রাখা হয়েছে। “তবলীগ” শব্দটি মহান আল্লাহ বাণী- “উ- বাল্লিগু কুম রেছালা’তে বাব্বি” অর্থাৎ আমি আমার প্রভু পদত্ত রেচালাত তোমাদের নিকট (তবলীগ করছি) পৌঁছাচ্ছি। এবং রসুলে পাক (দঃ) এর বাণী “বাল্লিগু আন্নি ওয়া লাউ আয়াতান” অর্থাৎ তোমরা আমার পক্ষ হতে একটি মাত্র আয়াত (সামান্য দ্বীনি কথা) হলেও পৌঁছে দাও। সংঘসদ্ধ ভাবে কাজ করার উদ্দেশ্যে “কমিটি” শব্দটি রাখা হয়েছে। এবং বাংলাদেশে এ কমিটির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে বলে পরে “বাংলাদেশ” সংযোগ হয়েছে।

এ কমিটির গুরুত্বঃ
এক কথায় “মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ” আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিত একটি আধ্যাত্মিক সংগঠন, “আধ্যাত্মিক” হচ্ছে এমন এক বিশেষ জ্ঞান, যাদ্বারা আত্মা সমূহের পবিত্র করণ, চরিত্রের শোধন, যাহির ও বাতিনের পূর্ণ গঠন এবং চিরস্থায়ী কল্যাণ অর্জন সাধিত হয়। অতএব, তরিক্বতের সাংগঠনিক ও এশায়াতের কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে আঞ্জাম দেয়ার জন্যই এ অধ্যাত্মিক সংগঠন। এ আধ্যাত্মিক সংগঠনের অর্ন্তভুক্ত হয়ে- প্রত্যেক তরিক্বতপন্থী সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ তরিক্বতের প্রচারে আত্ম নিয়োগ করেন। ইহকালিন কল্যাণ ও পরকালের মুক্তির দিক নির্দেশন দিয়ে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক তৎপরতা ব্যতিরেকে তরিক্বতের পয়গাম সুসলিম সমাজে পৌঁছে দেয়া সম্ভব নয়। পবিত্র কালামে পাকে আল্লাহ পাক ঘোষনা করেছেন।

“তোমার সংঘবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধর, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হায়েনা। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা, আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন (সূরা আলে এমরান)। আরো বলা হয়ে “তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত যারা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারন করবে অন্যায় কাজ থেকে। আর তারাই হলো সফলকাম। হুজুর পাক (দঃ) ঘোষণা দিয়েছেন “যে ব্যক্তি জান্নাতের আনন্দ ভোগ করতে আগ্রহী সে যেন সংগঠনকে আকড়ে ধরে”। অতএব, মহান আল্লাহ পাক এবং হুজুর (দঃ) এর পবিত্র বাণীর বাস্তবায়ন করছে “মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ”

স্বকীয় বৈশিষ্ট্য সমূহ

গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ